💄 লিপ্সটিক সুন্দরী 💄 (১ম পর্ব)

✒
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে রাত-দিন কেটে যাচ্ছিলো। ঘুমাতে গেলেও মাঝে মাঝে বিরক্ত হতাম। বিরক্ত হতাম এর কারণেই যে, এতই ঘুম পাগল ছিলাম যে সকাল ৭ টায় একবার ৮ টায় এবং ৯ টায় এলার্ম  দিয়েও ১০ টার সময় কোচিং এ যেতে পাড়তাম নাহ। এমনই ঘুম বোম ছিলাম যে ঘুমালে যদি কেউ লুংগিও খুলে নিয়ে যেতো তবুও টের পেতাম নাহ।
.
আচ্ছা আসল কথায় আসি,,
একদিন বিকেলে হাটতে ছিলাম। দিনটা ছিলো শুক্রবার। একা একা হাটা-হাটি করতেই খুব ভাল লাগতো। আমার একটা অভ্যাস ছিলো একা কোথাও হাটতে বের হলে কানে হেড ফোনে দিয়েই বের হতাম। কারণ যাতে মেয়েদের সুন্দর কথা গুলো না শুনতে হয়। এক সাথে রাস্তা দিয়ে দুই-তিনটা মেয়ে গেলেই বোঝা যায় তারা কতো টুকু ভদ্র মেয়ে। আর এর কারণেই আমি হেড ফোনটা সাথে নিয়ে যেতাম।
.
যাইহোক সেদিনও একাই হাটছিলাম। গান শুনছিলাম আর গেইমস খেলছিলাম। এইভাবে হাটার কারণ যেখানে হাটছিলাম সেইখান দিয়ে সাইকেল বাধে আর অন্য কিছু যেতে পারবে নাহ। তাই হাটতে গেলে ঐ জায়গাটাকেই বেশি পছন্দ করতাম। কিন্তু ঐ দিন সকালে বৃষ্টি হওয়ার কারনে রাস্তার সাইডে এক পাশে পানি জমে গেছিলো।
.
আমি তো আর জানিনা এইটা। আমি তো মোবাইলের দিকে তাকিয়েই হাটছিলাম। ঠিক ওই জায়গায় গিয়েই পড়ে গেলাম। পড়ছি তাতে কোনো সমস্যা ছিলো না। সমস্যা হলো এমন ভাবে হাসছিলো মনে হয় কি বলবো। হাসি দেখে রাগ উঠে গেলো।  কিচ্ছু বললাম না। কাদা ছিলো যার কারনে কাদা লেগে গেলো শরীরে। আর তারা তো হাসতে হাসতে শেষ।  কিছুক্ষণ পর দেখি একজন হাত বাড়িয়ে দিলো। এরকম ভাবেই কাদায় পড়ে গেছিলাম যে উঠতেও পারছিলা নাহ।
.
- হাতটা ধরে উঠে আসুন।
 "অনেকক্ষন ভেবে চিন্তে বললাম এ ছাড়া উপায় নেই।" তবুও বললাম-
- নাহ ঠিক আছে।
- আপনার ভালোর জন্যই বলছি হাতটা ধরে তাড়াতাড়ি উঠে আসুন।
.
এই প্রথম কোনো মেয়ের হাত ধরলাম। ধরেও ছেড়ে  দিলাম।
এইবার সে আমার হাত ধরেই টান দিলো এমন ভাবেই টান দিলো যে এক্কেবারে উঠে গেলাম। কিন্তু এই কি তার মুখে কাদা লাগলো কিভাবে। তখন আমার খুব হাসি পাইতেছিল।
.
-  খুব হাসি পাচ্ছে? তাই না!!

"একেবারে হাসি বন্দ হয়ে গেলো তার কথাটা শুনে।"
- সরি। আসলে আমার জন্যই আপনার এরকম টা হলো।
- সরি না বলে টিস্যু দেন থাকলে।
.
পকেটে  হাত দিয়ে টিস্যুর প্যাকেট বের করলাম। কিন্তু একটা টিস্যুও নেই। দেখি প্যাকেট খালি।আশে-পাশে কোথাও দোকানও নেই। কি করবো ভাবছিলাম। একটু পর রুমালটা বের করে দিলাম।সে ও নিলো মুখ মুছলো।
.
- এই নেন আপনার রুমাল।
- ধন্যবাদ।
- কেনো??
- এই যে আমাকে হেল্প করলেন এর কারণে।
- ওহ আচ্ছা।  ঠিক আছে আর শোনেন পরের বার থেকে অন্ধের মতো হাটবেন নাহ। চোখ কান খোলা রেখে হাটবেন। 
.
কথাটি বলেই হাটতে লাগলো। আমিও রুমালটা পকেটে নিয়ে তার পিছু পিছু হাটা শুরু করলাম।একটু পর সে পিছনে তাকিয়ে দেখলো আমাকে। সে দাঁড়িয়ে পড়লো আমিও দাঁড়িয়ে পড়লাম।  একটু পর আবার হাসি দিলো। এইবার বুঝলাম এই হাসি সেই হাসি নয়। একটা রিক্সা দেখতে পেলাম।
.
- মামা যাইবেন??
- না মামা যামু নাহ।
- যাইবেন না কেনো?
- ঐ আফা আগে ডাক দিছে মামা।
- কোন আফা?  
.
পিছনে তাকিয়ে দেখলাম এই কি সে এখনো যায়নি। সে রিক্সায় উঠে গেলো। আমি পিছু হাটতে ছিলাম। একটু পর রিক্সাটা থেমে গেলো। আর তার ডাক শুনতে পেলাম।
.
- কোথায় যাবেন আপনি???
- এইতো একটু সামনে যাবো।
- আমিও সামনে যাচ্ছি। চাইলে আমার পাশে বসতে পারেন।

"একটু ভাবলাম যদি না উঠি তাহলে আমার হেটেই যেতে হবে।  উঠে পড়লাম।" বাসার সামনে এসে পড়লাম। ফ্রেশ হয়ে রুমালটা আম্মুর কাছে দিয়ে বললাম একটু ধুয়ে দাও।

প্রায় ১০ মিনিট পর আম্মুর ডাকে আসলাম -

- কি বলো।
- কই গেছিলি তুই??
- একটু হাটতে গেছিলাম।
- হাটতে গেছিলি???? নাকি অন্য কোথাও?? ((( রেগে গেছে)))
- কি বলো এইসব???
- এইটা কিসের চিহ্ন??
"দেইখা তো আমি নিজেই অবাক হলাম।"
- আজকা তোর বাপে আসুক।
.
বলেই রুমালটা আমার মুখের সামনে ছুঁড়ে মারলো। আমিও ভাবতে লাগলাম এই দাগ আসলো কিভাবে? পরে মনে পড়লো।
উনাকে তো আমার রুমালটা দিয়েছিলাম মুখ মুছার জন্য। এর মানে এটা লিপ্সটিক এর দিহ্ন। এটা কি হলো ভাবতে ভাবতে রাত ১০ টা বেজে গেলো।
.
আমি তো জানি আমার কপালে আজ কি যে আছে। আব্বু আসলো গলার আওয়াজ শুনলাম। আমি আস্তে করে বাল্বটা বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম। যাতে বুঝতে পারে আমি ঘুমিয়ে পড়ছি। আর তার কথা ভাবছি। কি যে সুন্দর ছিলো। কি সুন্দর মায়াবী চেহারা। আবার ঠোঁটে পিংক কালারের লিপ্সটিক। চোখে কাজল চুল গুলো বাতাসে উড়ছিলো। আমার লাইফে এরকম পরি প্রথম দেখলাম। ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে বাবার ডাকে ঘুম ভাংগে।
.
.
.
📝 হৃদয় নাদিম (((AR PagLaaa)))