💄 লিপ্সটিক সুন্দরী 💄 (২য় পর্ব) (শেষ পর্ব)

- হৃদয়....
- হুমমম (ঘুম ঘুম কন্ঠে)
- তোর ঘুম ছুটাইতাছি দারা (ভয়ংকর কন্ঠে)
.
বলেই আমার রুম থেকে বের হয়ে কোথায় জানি গেলো। আর আমি তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠেই বের হয়ে গেলাম বাসা থেকে। আমি আগেই জানতাম যে আমার কপালে খারাপ কিছু আছে আজ। যাইহোক বাসা থেকে বের হয়ে ভালই করছি নাইলে আজ আমার উপর লাঠি ভাংতো। বাবা খুব রাগি। তাকে আমি ভয়ংকর রকমের ভয় পাই। এক ফ্রেন্ডকে ফোন দিলাম -
.
- দোস্ত কই রে তুই? 
- শালা এত সকালে ফোন দিয়া বলছিস আমি কই। (ঘুম ঘুম কন্ঠে)
- তুই ঘুমাচ্ছিস? আর আমারতো এই দিক দিয়া বাশ যাইতাছে।
- তোর বাশ যাবেই। ফোন রাখ তাড়াতাড়ি। 
- হ্যালো হ্যালো হ্যালো...  
.
কেটে দিছে ফোন। এতখন যার সাথে কথা হলো তার নাম নিমন। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। কিন্তু একটাই সমস্যা আমার মতো ঘুমের সময় যত বড়ই কাজ হোক না কেনো তাকে তখন পাওয়া যাবে না। কি আর করার বসে রইছি বাসা থেকে অনেক দূরে গিয়ে। ভাবতেছি কি করবো। কেনো যে ঐ মেয়েকে রুমালটা দিতে গেছিলাম। তার জন্যই আজ আমার এই অবস্থায় পড়তে হলো। 
.
ধ্যাত!!! বলতেই আমার মোবাইল বেজে উঠলো। ফোনটা উঠাইয়া দেখি বাবার কল। তাড়াতাড়ি দিলাম ফোনটা সুইচ অফ করে। যাক বাবা বাঁচা গেলো। তখন সকাল ১২:০০ টা বেজে গেছে। পকেটে কোনো টাকাও ছিলো না। থাকবে কিভাবে কোনো রকম তো জানটা নিয়ে বের হতে পারছি। কিছুই ভেবে পাচ্ছিলাম নাহ। এইবার সোজা চলে গেলাম নিমনের বাসায়। 
.
জীবনের প্রথম ওদের বাসায় যাচ্ছি। আংকেল-আন্টি হাজার বার বলেও নিতে পারেনি। আজ যাচ্ছি বিপদে পরলে যা হয় আর কি।  দরজার সামনে গিয়েও ভাবছিলাম যাবো কি না। নিচে তাকিয়ে ভাবতে ছিলাম কি করবো। যাহ নক করলাম দরজা। দরজা খুললেন কিন্তু পরে যা দেখলাম সেটা দেখার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। আমি কখনই ভাবি নাই এরকমটা।
.
- নিমন..  নিমন বাসায় আছে?
- হ্যাঁ আছে। 
- কে আসছেরে বলেই আন্টি আসলো। আরে হৃদয় তুমি। বাহিরে কেনো ভেতরে আসো।
- হ্যাঁ আন্টি। নিমন কোথায়?? 
- ও এখনো ঘুমাচ্ছে। তুমি ভেতরে আসো বাবা। 
.
ভেতরে গিয়ে বসলাম। কিন্তু ভাবছি উনি এখানে কেনো। হ্যাঁ ভাই  উনি বলতে সে মানে উনি হচ্ছে সেই "লিপ্সটিক সুন্দরী" যার জন্য আমার আজ এখানে আসতে হলো। মনে মনে খুশিও লাগছে। এখন আর বাসার চিন্তাটা মনে আসছে নাহ।
.
- আন্টি নিমন কোন রুমে??
- ওই তো ওই রুমে।
.
রুমে গিয়ে দেখি শালায় মরার মতো ঘুমাচ্ছে। সব জাল ওর উপর দিয়ে উঠাবো আজ চিন্তা ভাবনা এটাই ছিলো।
.
- ঐ হারামি উঠ। লাথি দিয়ে বললাম।
- কিরে তুইইইইইইইই। 
- শালা ফোন কাটছোত কেন তখন??  
- আরে কাহিনী কি ঐ টা বল। 
.
পরে সব কাহিনী বললাম। কিন্তু মেয়েটা যে তিন্নি ছিলো সেটা বলি নাই তখনো। ওহ হ্যাঁ তার নাম ছিলো তিন্নি। উনি যেমন সুন্দরী ছিলেন তার নামটাও তত টুকুই সুন্দর। তিন্নি ছিলো নিমনের কাজিন। কয়েকদিন হলো নিমনদের বাসায় বেড়াতে এসেছে। যাই হোক ফ্রেশ হলাম। খুব খুদা লাগছে কিছু একটা খাওয়া দরকার। নিমনকে বললাম খাবারের কথা। বলেই ওর ল্যাপটপ টা নিয়ে গান শুনতে শুরু করে দিলাম।
.
কিছুক্ষন পর তিন্নি আসলো। 

-উঁহুম ( জোরে একটা কাশি দিয়ে)
"পিছনে তাকিয়ে দেখি আমার নিল পরি। না মানে তিন্নি।"
-আসবো?? 
-হ্যাঁ অবশ্যই। 
"খাবার গুলা রাখলেন টি টেবিলে। খাবার দেখে লোভ সামলাতে পারছিলামনা।"

-আচ্ছা কেমন আছেন?? 
- হ্যাঁ ভাল। আপনি?? 
- হ্যাঁ বেশ ভাল। (আমি নিজেই তো যানি কত্তটা ভাল আছি)
- জ্বি কিছু বললেন?? 
- নাহ কিছু বলিনি।
.
উনি চলে গেলেন। আমি এদিকে খাওয়া শুরু করে দিলাম। একেবারে ভাল মতো খেলাম। এইবার একটা ঘুম দেওয়া দরকার। এমনি সকালে ঘুমাতে পারিনি। ঘুম দিলাম ঘুম থেকে ৬:০০ টায় উঠলাম। ঘুম থেকে উঠে ফোনটা না অন করলাম দেখি ৯৯+ কল দিয়েছে বাবার ফোন থেকে। Auto reply এসে পড়লো। একটা মেসেজও দিয়েছে। যাক মেসেজটা পড়ে একটু শান্তি লাগলো। বুঝলাম অনেক চিন্তায় পরে আছে বাসার সবাই। বাবাকে কল দিলাম। বাবাকে সব কিছু খুলে বললাম। আর বললাম আগামীকাল কাল বাসায় যাবো।  
.
অনেক বলে রাজি করালাম। আগামীকাল যাবো কারন তিন্নিকে তো একটু দেখতে পারবো। যাইহোক ঐ দিন থেকেই গেলাম নিমনদের বাসায়। রাতে সবাই এক সাথে ডিনার করলাম। আমি একটু পর পর তিন্নির দিকে তাকাই আর তার খাওয়া দেখছি। আমি নিজে কিছু খাচ্ছি না। একটু পর আন্টি জোড়ে একটা কাশি দিলো। হুমম আন্টি বুঝে গেছে আমার কাহিনী। একটু লজ্জা পেলাম তাড়াতাড়ি খেলাম। 
.
খেয়ে  রুমে এসে পড়লাম। ঐ দিন তিন্নির বার্থডে ছিলো। কিন্তু আমি তো জানতাম নাহ। কি আর করার গিফট ছাড়াই উইশ করলাম। নিজের কাছেও যেনো কেমন লাগছে। 
.
- আচ্ছা কাল দেখা করতে পারবেন?? 
- কেনো??  
- না মানে আপনার বার্থডে ছিলো আজ। কিন্তু আমি তো জানতাম নাহ। তাই কাল যদি একটু দেখা করতেন।
- হুমম ট্রাই করবো।
- হ্যাঁ আচ্ছা ধন্যবাদ। ঐ জায়গায় দেখা করলেই ভাল হবে 
- হ্যাঁ আচ্ছা।
.
ঐ দিন বাসায় আসলাম। বাসা পুরাই ঠান্ডা। ভাল লাগছিল তখন। বিকেলে বের হবো। একটা নীল রং এর পাঞ্জাবি পড়লাম। একটা গিফট কিনলাম ভাল চেয়ে সাথে একটা চিঠি।
অপেক্ষা করছিলাম। একটু পর দেখি তিন্নি আসতেছে।  
.
- কেমন আছেন?
- এইতো ভাল।
- হ্যাপি বার্থডে সাথে গোলাপ ফুল দিলাম।
"আমি উইশ করলাম নাকি প্রোপোজ করলাম কিছুই বুঝলাম নাহ। "
- ওহহহ ধন্যবাদ। 
.
তিন্নিও নীল রং এর একটা শাড়ি পড়ে আসছে। ঠোঁটে লিপ্সটিক, হাতে চুরি, কপালে টিপ, চুল গুলো বাতাসে উড়ছে।  কি যে সুন্দর লাগছিলো তাকে, যাহ বলে বোঝাতে পারবো নাহ। আমি পুরাই মুগ্ধ হয়ে গেছি তাকে দেখে। এই প্রথম কোনো নারীর জন্য পাগল হয়েছি।  ঐ লিপ্সটিক সুন্দরীটাই এখন আমার বউ। আজ আমাদের দুই বছর পুর্ন হলো বিবাহ বার্ষিকীর। ফ্যামিলি গত ভাবেই আমাদের বিয়ে হয়। 
.
ঠিক এরকমটাই ঘটেছিলো বড় ভাইয়ের জীবনে। দোয়া করি আপনারা সুখে থাকুন সবসময়। 
.
.
.
📝 হৃদয় নাদিম (((AR PagLaaa)))