সারা রাত ইভাকে নিয়ে ভেবেছিলাম। ইভা বুঝে গেছে যে আমি তাকে পছন্দ করি। এবং আমিও বুঝে গেছি ইভা আমাকে পছন্দ করে। এখন শুধু প্রকাশ করা বাকি আছে। যাই হোক না কেনো আমি আগে প্রকাশ করছি না। আমি তার মুখেই প্রথম শুনতে চাই না বলা কথা। দিন যাচ্ছে আর আমাদের ভাললাগার মূহুর্ত গুলোও বাড়ছে। তিন দিন হয়ে গেলো। ইচ্ছে করছে সারাটি জনম ধরে কাটিয়ে দেই ইভার সাথে।
.
একটা সময় মোবাইল নম্বর দেওয়া নেওয়া হয়ে যায়। ইচ্ছে করলে অনেক আগেই নিতে পারতাম আকাশের কাছ থেকে। কিন্তু আমি চেয়েছিলাম ইভার কাছ থেকেই নেয়ার জন্য। পরের দিন ইভার আন্টির বাসায় যাই আমরা। ঐ খানে গিয়েছিলাম আমি, ইভা আর আকাশ আন্টি যায়নি। তার আন্টির বাসায় দুই দিন থাকি। এই দুই দিনে ইভার প্রতি দূর্ভলতা আরো বেড়ে যায় আমার। যতই তাকে দেখছি ততই পাগল হচ্ছি।
.
আপনি থেকে তুমি তে আসলাম। তুমি করে ডাকার মাঝে মধুর একটা ফিলিংস কাজ করে যা আপনি ডাকার মাঝে নেই। ইভা যখন আমাকে তুমি করে বলে তখন নিজেকে কেন জানি ইভার স্বামী মনে হতো। ইভার তুমি ডাকের মাঝে লুকিয়ে আছে অনেক ভালবাসা।
.
- এই শোনো না।
- হুমমম বলো।
- না কিছু না।
- আহা বলোনা।
- নাহ বলবো না।
- আচ্ছা বলতে হবে না কিছু তোমার।
- তোমার হাতটি আমার হাতের উপর রাখবে একটু??
- কেউ দেখে ফেললে??
- দেখুক তাতে কি?
- আচ্ছা ঠিক আছে রাখছি।
.
ইভার হাতটি ধরে রাখলাম। আমি ইভার হাত যখনি ধরেছি তখন একটা কথাই বলেছিলাম। তোমার হাত এত ঠান্ডা কেনো। ইভা প্রতিবারই একটা উত্তর দিয়েছে। আমি কিভাবে বলবো সাথে লজ্জাময় হাসি। আমরা এখনো কেউ কাউকে বলিনি ভালবাসি। তবুও আমরা বুঝতে পেরেছি যে আমরা দুজন দুজনকে ভালবেসে ফেলেছি। এভাবে কাটছিলো আমার আর ইভার প্রেম কাহিনী।
.
- রিয়াদ তুই কইরে??
- আমি তো বাসার আশে পাশেই আছি। কিন্তু কেনো কি হয়েছে??
- তুই একটু তাড়াতাড়ি বাসায় আয়।
- আসতেছি আমি।
.
পরে বাসায় গেলাম তাড়াতাড়ি করে। যেয়ে দেখি আকাশ আর ইভা একসাথে বসে হাসা-হাসি করছে আমাকে দেখে। আমি তাদের সামনে যেয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছে আকাশ।আকাশ বললো ইভা তোকে কি যেনো বলবে। আমি ভাবলাম কি আর বলবে। পরে শুনি এমনি বাসায় আসতে বলেছে। এমন ভাবে আকাশ বলে ছিলো বাসায় আসার জন্য যাতে কি যেনো হয়ে গেছিলো।
.
পরে তিনজন একসাথে বসে গল্প করছিলাম। একটু পর আন্টি ও আমাদের পাশে এসে বসলেন সাথে আফিয়া। মানে ইভার পিচ্ছি বোনটা। বুঝিনা আফিয়াকে এত ভাললাগে কেনো আমার। অনেক সময় ইভাকেও বলেছিও যে তোমার চেয়ে আফিয়াকে আমার অনেক ভাল লাগে। আর তখনই সে মুখটা গোমরা করে বসে থাকতো। হ্যাঁ ভাই হয়তো কিছু একটা আন্দাজ করতে পারছেন এই লেখাটা পড়ে? তা শেষ পর্যন্ত কি হয় তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
.
তখন আন্টির সাথেও অনেকটা ফ্রি হয়ে যাই। আন্টি মনে হয় বুঝতো আমার আর তার মেয়ের ব্যাপারটা। কিন্তু আন্টি কিছু বলতো না আমাদের। না বলার কারন আকাশ আন্টিকে কি যেনো বলেছিলো। আমরাও আমাদের মতো পাগলামি করতে থাকি।
.
প্রায় ৮ দিন থাকলাম আমরা বরিশালে। ৭ দিন পর ঢাকায় ফিরে আসবো কথা ছিলো। কিন্তু আরো একদিন থাকতে হলো ঐ খানে। কারন কিসের যেনো একটা মেলা শুরু হলো। ঐ মেলাটা নাকি অনেক বড় হয়। সবাই মেলায় যাই পরে অনেক কিছু কেনা কাটা করলাম। আমি ইভার জন্য এবং আমার পিচ্ছি শালি মানে ইভার বোনের জন্য কিছু কিনে নিলাম। আর ইভা আমার জন্য একটা রিস্টব্যান্ড নিলো। সত্যি বলতে এই রিস্টব্যান্ড আমি অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি কোথাও। ঐটা যে বরিশাল এসে পেয়ে যাবো তা কখনো চিন্তাও করিনি। রিস্টব্যান্ড ছিলো নীল রংয়ের সাথে নীল রংয়ের একটা মাফলার।
.
এখন পর্যন্ত ইভার দেয়া গিফট গুলো রেখে দিয়েছি খুব যত্ন করে। যা দেখে আগের কথা গুলো মনে পড়ে। আমি তেমন ভাল কিছু কিনি নাই তার জন্য। শুধু একটা লাল রংয়ের লিপ্সটিক, নীল চুরি আর টিপের এক পাতা দিয়েছিলাম। আমার দেয়া লিপ্সটিক, চুরি এবং টিপটা এখনো রেখে দিয়েছে খুব যত্ন করে।
.
- ইভা।
- হুমমম বলো।
- আফিয়া কে নিয়ে একটু আমার রুমে আসো তো।
- তুমি যাও আসছি আমি।
.
পরে আমি রুমে গিয়ে বসে আছি। একটু পর আসলো ইভা আর ছোট বোন। ইভা এসে বসলো আমার পাশে। আমি ইভার হাতে চুরি গুলো পরিয়ে দেই এবং একটা টিপ পরিয়ে দেই। পরে লিপ্সটিক তার হাতেই দিই। কিন্তু ইভা বললো সব কিছু যখন পরিয়ে দিয়েছি লিপ্সটিক টাও দিয়ে দিতে। কিন্তু আমার একটু লজ্জা লাগছিলো তখন। পরে আমি নিজে হাতে তার ঠোঁটে দিয়ে দিলাম। আফিয়ার জন্য একটা পুতুল এনেছিলাম। আফিয়া দেখে খুব খুশি হয়েছে বুঝা যাচ্ছে।
.
- চোখ বন্ধ করবে একটু প্লিজ।
- কেনো?
- ইসসসস একটু করোনা।
- আচ্ছা করছি।
- উম্মাহ.....
.
বুঝতেই পারছেন কি হলো। চোখ মেলতেই দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। মোবাইলের ডিসপ্লেতে তাকিয়ে দেখি আমার গালে ইভার ঠোঁটের ছাপ। পাগলিটা যে মাঝে মাঝে কি পাগলামি করে না।এখন যদি কেউ দেখে ফেলে তাহলে কি ভাববে সবাই। কথাটা বলতে না বলতেই আকাশ এসে হাজির। আমি আকাশকে দেখে অন্যদিকে ফিরে মুছে ফেলতেছিলাম। কিন্তু পরে শালা দেখেই ফেললো।
.
- কিরে তোর গাল লাল কেনো রে??
- কই,কই লাল?
- এত তোতলাচ্ছো কেনো দুলাভাই??
- শালা তুই এখান থেকে যাহ তো।
- হুমমম ভাল তো ভাল না।
- হু ভালই।
- আর শোন আগামীকাল আমরা ঢাকায় ফিরবো। ব্যাগ গুছিয়ে রাখিস।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
- আর তাড়াতাড়ি মুখ ধুয়ে নে। আন্টি দেখলে কিন্তু সমস্যা হবে।
- আচ্ছা দোস্ত ঠিক আছে।
- আর এত তাড়াতাড়ি গাল লাল করিস না।
.
হাসতে হাসতে বের হয় রুম থেকে। আমি পকেট থেকে টিস্যু নিয়ে ভাল মতো মুছে নিলাম। তবুও লাল দাগটা লেগেই আছে। পরে ভাল করে পানি দিয়ে ধুয়ে নিলাম। আমার কাহিনী দেখে ইভাও হাসছিলো পিছনে দাঁড়িয়ে। যেটা পিছু ফিরে দেখতে পাই।তার হাসি দেখে আমিও হেসে দিলাম।
.
.
.
📝 Ridoy Nadim (((AR PagLaaa)))

Comments
Post a Comment