সময় কিভাবে এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলো বুঝতেই পারলাম না। ৮ টা দিন মনে হচ্ছে ৮ ঘন্টার মধ্যেই শেষ হয়ে গেলো। কিন্তু এই ৮ দিনের প্রতিটা মূহুর্ত প্রতিটা সেকেন্ড ইভা আর আমার সব স্মৃতি গুলো চোখের মধ্যে বাসছে। লঞ্চে বারান্দার পাশে বসে বসে ভাবছিলাম তার কথা গুলো। পাশে এসে বসলো আমার রাজকন্যা। দেখতে পাইনি তখন কারন চোখ বুঝে ছিলাম।
.
- উঁহুম <একটু কাশি দিলো>
- কখন আসলে?
- এইতো বিশ মিনিট হয়ে গেলো।
- ওহহহহহ।
- কি ভাবছিলে এভাবে চোখ বুঝে??
- ভাবছিলাম কিভাবে শেষ হয়ে গেলো ৮ টা দিন, তাইনা?
- হুমম। <মন খারাপ করে>
- কাল থেকে রাতে ঘুমানোর আগে তোমার ঐ চাঁদময়ি মুখটা দেখতে পারবো না। কাল সকালে আর তোমার মুখে "শুভ সকাল" শুনতে পারবো না।
- মন খারাপ করছো কেনো রাজকুমার। দেখা হবে না কে বলেছে?? আমি তো একেবারে চলে যাবো না কোথাও। তোমার যখন ইচ্ছে হবে আমাকে কল করবে কথা বলবো।
- তবুও।
- মন খারাপ করে না আমার পাগল কুমার। এখন তো আমি কাছেই আসি। এখন একটু তাকাও আমার দিকে।
- আচ্ছা পাখি।
.
একসাথে বসে কথা বলছিলাম আমরা দু'জন। কি ভালই না লাগছে। যদি সারাটি জীবন এভাবে কাটাতে পারতাম। আমি তার চোখের ইশারা বুঝতে পারছিলাম কি চাচ্ছে ইভা। ইভার চোখের মধ্যে পানি জমে ছিলো। জানি কান্না করে দিবে যদি আরো বেশি ভেঙে যাই আমি। তাই আমি তাকে শান্তনা দিচ্ছিলাম। একটু আগে ইভা আমাকে শান্তনা দিয়েছে এখন আমি দিচ্ছি। খুব ভালবাসি দু'জন দু'জনকে।
.
- কিরে তোরা এখানে বসে আছিস??
- হ্যাঁ কেনো? <মন খারাপ করে>
- দোস্ত মন খারাপ করিস না তো। তোকে মন খারাপ দেখলে আমার অনেক খারাপ লাগে।
- হুমম।
- আমার উপর ভরসা আছে তো তোদের?? যদি ভরসা থাকে তাহলে দয়া করে মন খারাপ করে থাকবি না। আমি আছি তোদের সাথে।
.
আসলেই আকাশ আমার বন্ধু নয়। আকাশ আমার আপন ভাই।আসলে আমার জীবনে আকাশের মত বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। আমার বিপদে আমি সবসময় আকাশকে পেয়েছি।আমার নিজের খুব প্রাউড ফিল হচ্ছে। চার পাঁচটা নয় মনের মতো একটা ফ্রেন্ডই যথেষ্ট। আমি পেয়েছি এটা আমার ভাগ্যের ব্যাপার।
.
লঞ্চ চলছিলো আমরাও আমাদের মতো করে চলছিলাম।আমাদের ব্যাপারটা আন্টি মানে ইভার আম্মু বুঝে গিয়েছে হয়তো। তাই আন্টির সামনেই ইভার সাথে ফ্রি ভাবে কথা বলতে পারতাম। আন্টির কাছে অনেক ভাল ছেলে বলে পরিচিত হলাম। আমাকে খুব ভাল ছেলে জানতো কিন্তু আমি ততোটা ভাল নয় যতটা আন্টি ভাবতো। তবে এইসব কিছুই আকাশের জন্যই সম্ভব হয়েছে। জানিনা কি বলেছে আমার ব্যাপারে।
.
আমি আন্টির কাছ থেকে আফিয়াকে মানে ইভার ছোট বোনকে নিয়ে আসলাম। আফিয়ার সাথে দুষ্টামি করতে ছিলাম পাশে ইভা ছিলো। অনেক ভালই লাগছিলো তখন। ভালবাসা টা কেনো জানি খুব বেড়েই যাচ্ছিলো আমাদের। কিন্তু সে ভালবাসা যে আমাদের চুম্বকের মতো ধরে রাখবে তা বুঝতেই পারিনি। ভালবাসাই পারে ভালবাসাকে বেঁধে রাখতে।
.
- এই রিয়াদ।
- হুমম বলো।
- আগামীকাল তো আমরা বাসায় চলে যাচ্ছি।
- হ্যাঁ।
- কাল বিকেলে তুমি আমাদের বাসায় আসবে।
- আমি তো চিনিনা।
- আকাশ ভাইয়ার সাথে আসবে।
- তা না হয় গেলাম কিন্তু কেনো??
- আগে যাবে তারপর বলবো।
- প্লীজ প্লীজ বলোনা।
- উঁহু বলা যাবেনা এখন।
- আচ্ছা বলতে হবে না।
- রাগ করলে বাবু।
- না রাগ করে কি হবে। আমি রাগ করলেই কি!
- এই যে রাগ করবে না বলে দিলাম। এই শোনো না। কিগো??
.
আমার হাতটি ধরলো এবং আমার কানের কাছে গিয়ে ফিস ফিস করে বললো...
- ভালবাসি তোমায়।
- বুঝতে পারিনি আবার বলোনা কি বললে।
- ভালবাসি তোমায়।
- কি, কি বললে এখনো শুনতে পাইনি।(মজা করছিলাম)
- যাও আর শুনতে হবে না।
- এটাই লাস্ট বলো আর একবার।
- আই লভ ইউ।
- লভ ইউ টু....
- সত্যি??
- হুমম সত্যি।
.
তখন রাত হয়ে গেছিলো। অন্ধকার ছিলো আর আমরা দু'জন আড়ালে এক কোনায় দাঁড়িয়ে প্রেম করছিলাম। আমার হাতটি ধরে রেখেছিলো শক্ত করে। ঠান্ডা বাতাসে ইভার চুল গুলো আমার চোখে মুখে লাগছিলো। খুবই খুবই রোমান্টিক মনে হচ্ছিলো আমাদের। সারারাত জেগে জেগে বাহিরে অন্ধকারের দৃশ্য দেখছিলাম।
.
অবশেষে সকাল হয় এবং আমরা লঞ্চ থেকে নেমে যাই। বাসায় আসার জন্য গাড়িতে উঠি। শেষে ইভাকে ছেড়ে বাসায় চলে আসি। ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে ইভাকে ফোন করি। ইভা ঘুমাচ্ছিল তাই তখন আর রিসিভ করতে পারেনি। আমি একটু এফ বি তে লগ ইন করি।নোটিফিকেশনে দেখলাম আজ ইভার জন্মদিন। পরে বুঝতে পারলাম ইভার আজ জন্মদিন।
.
পরে ভাল দেখে কিছু গিফট নিলাম তার জন্য। আকাশকে ফোন করে জানালাম এই ব্যাপারে। পরে ইভার বাসায় গেলাম আমরা দু'জন। যেয়ে দেখি ইভার অনেক ফ্রেন্ড ছিলো সেখানে। পরে আমার সাথে ইভার ফ্রেন্ডদের কে পরিচয় করিয়ে দেয় সেইদিন।খুব ভাল ভাবে আমরা জন্মদিন পালন করি।
.
.
.
📝 Ridoy Nadim (((AR PagLaaa)))

Comments
Post a Comment