✴স্বপ্নময়ী✴ (৪র্থ পর্ব)






.

.

- বাহ খুব সুন্দর করে গান গাইতে পারো তো।

- আমি জানি যে আমি ভাল করে গান গাইতে পারিনা।

- নাহ সত্যি। অনেক ভাল লেগেছে আমার কাছে।

- ওহহ তাই?

- হুমম অবশ্যই তাই।

- ধন্যবাদ। এই প্রথম কেউ আমার প্রশংসা করলো।

- কেনো আর কেউ করেনি?

- না। আম্মু একবার শুনে বলেছিলো। না থাক কিছু না।

- বলো না। কি বলেছে?

- বলেছিলো আমার গান শুনে নাকি কুকুর পানিতে পড়েছে।

- হা হা হা। এইটা বলেছে?

- তুমি হাসবে জানতাম। তাই বলতে চাইনি।

- হাসির মতো কথা শুনলে তো বাসবোই। তাই না?

- হুমম।

- আর উনি মিথ্যে বলেছেন। মোটেই কেউ পানিতে পরবে না তোমার গান শুনে। < হেসে দেয় কথাটি বলে>

- হুমম হাসো বেশি করে হাসো।

.

বলেই অভিমান করে চলে যাবে এমন সময় স্নিগ্ধাও বলে ফেলে-

" আমিও তোমাকে ভালবাসি

ওগো তোমাকে ভালবাসি

ভালবাসি শুধুই তোমাকে"

.

পিয়াস পিছু ফিরে তাকাতেই স্নিগ্ধা দৌড়ে নিচে নেমে যায়। পিয়াস তো ভাবতেই পারছে না। আসলেই কি পিয়াস সত্যি সত্যি এই কথাটি স্নিগ্ধার মুখ থেকে শুনতে পেয়েছে? কি করে সম্ভব এটা? পিয়াস মনে মনে ভাবছে।

.

তখন পিয়াসের মুখের দিকে তাকানোই যাচ্ছিলো না। পিয়াস নিজেই স্নিগ্ধার এরকম কথা শুনে লজ্জায় তার মুখটি লাল হয়ে গেছে। সাথে সাথে পিয়াস তার বন্ধু নাদিমকে ফোন করে।

.

- হ্যালো দোস্ত

- হুমম পিয়াস বল। কি ব্যাপার এত খুশি মনে হচ্ছে।

- হুমম রে দোস্ত। আমি অনেক অনেক হ্যাপি রে।

- কি হয়েছে খুলে বল।

.

সব কিছু খুলে বলে নাদিমকে। এমন ভাবে বলছিলো যে মনে হচ্ছে পিয়াস আকাশের চাঁদটি তার হাতের মুঠোয় পেয়েছে।

.

- পিয়াস দোস্ত তাহলে তো সব হয়েই গেলো।

- কি হয়ে গেছে নাদিম?

- এই যে মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি।

- যা বেটা।

- ওলে বাবালে তুই দেখি আবার লজ্জাও পাচ্ছিস।

- চুপ কর তো। ফোন রাখলাম। আগামীকাল দেখা হবে।

- আচ্ছা। ভাল থাকিস।

.

ফোনে কথা বলা শেষ করে নাদিমের সাথে। পরে ছাদ থেকে নিচে নামে। সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পা পিছলে পরে যায় নিচে। সামান্য পা কেটে যায়। হাতে কিছুটা ব্যথা পায়। রুমে ভেতর ঢুকে। স্নিগ্ধা টিভির রুমে বসে টিভি দেখছিলো। আর বাকিরা সবাই ঘুমাচ্ছিলো। স্নিগ্ধা পিয়াসের এই অবস্থা দেখতে পেয়ে তাড়াতাড়ি মেডিসিন লাগিয়ে দেয়

.

পিয়াস অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। মনে হচ্ছিলো পিয়াসের পা কেটে গেছে কিন্তু ব্যথা পাচ্ছিলো স্নিগ্ধা। ভাল করে মেডিসিন লাগিয়ে দিচ্ছে। এবং কেটে যাওয়া অবস্থায় ফু দিয়ে দিচ্ছে। পিয়াস ভাবছে তাহলে সবসময়ই হাত-পা কেটে রাখবে তাহলে তার ভালবাসার ট্রিটমেন্ট পেতে পারবে।

.

পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলো পিয়াসের আম্মু। সব কিছুই দেখতে পেলো। কিন্তু তারা কেউ দেখতে পায়নি তাকে। পিয়াসের আম্মু কিছু বুঝতে না দিয়ে অন্যরুমে চলে যায়। পরে মনে পড়ে যায় ঐ দিন সকালের ঘটনাটি। তখন তার কাছে সবকিছুই পরিষ্কার হয়ে যায়। পিয়াসের আম্মু তখন দ্বিমত দেখাতে পারতেন কিন্তু না তিনি পজিটিভলি নিয়েছিলো ঘটনাটি।

.

পিয়াসের আম্মুর কাছেও স্নিগ্ধাকে ভাল লাগে। আসলে অনেক আগে থেকেই পিয়াস এবং স্নিগ্ধাকে পছন্দ করে রেখেছিলেন দুই পরিবারই। কিন্তু সেটা পিয়াস এবং স্নিগ্ধা কেউই জানতো না। আসলে আল্লাহ্‌ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।

.

- এরকমটা কিভাবে হয়েছে?

- নামতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গেছি।

- দেখে শুনে চলতে পারোনা! যদি কিছু হয়ে যেতো।

- কিছু হবে না।

- বললেই হলো কিছু হবে না।

- হুমম হবে....

- একদম চুপ। কোনো কথা নেই। এখন থেকে সাবধানে চলাফেরা করবে। বলে দিলাম।

- জ্বি আচ্ছা।

.

স্নিগ্ধার চোখে পানি এসে পড়ে। যেটা পিয়াস খেয়াল করে। আসলে স্নিগ্ধার চোখের পানিটা দুঃখ বা কষ্ট পেয়ে বের হচ্ছে না। যেটা বের হচ্ছে সেটা হলো পিয়াসের প্রতি তার ভালবাসার জল।

.

পিয়াস বসে আছে তার পাশে স্নিগ্ধা। এরকম ভাবে একে অপরের দিকে চেয়ে আছে যেনো কখনো পলক সরবেনা। সবসময় ভালবাসি এটা প্রকাশ করতে হয়না। মাঝে মাঝে চোখই বলে দেয় ভালবাসার কথা। শুধু বুঝে নিতে হয় চোখের ভাষা।

.

সবাই প্ল্যানিং করে কুয়াকাটা বেড়াতে যাবে। কুয়াকাটা নাম শুনেই পিয়াসের ঐ দিনের স্বপ্নের কথা মনে পড়ে যায়। এবং ভাবছে স্বপ্নটাকি আসলেই সত্যি হয়ে যাচ্ছে?

.

.

.

Ridoy Nadim (((AR PagLaaa)))

.

Comments