- এই উঠো। আরে উঠো না সাহরির সময় হয়ে গেছে তো।
- হুমম উঠছি <ঘুম ঘুম কন্ঠে>
- আচ্ছা তুমি উঠে ফ্রেশ হও আমি খাবার গুলো গরম দিচ্ছি।
- আচ্ছা যাও।
.
রাত্রির সাথে কথা বলছিলাম। রাত্রি হচ্ছে আমার মিষ্টি বউ। প্রতিদিন তার কথা রাখতেই হয়। কিন্তু তার অনুরোধ গুলো তত বড় বা দামি কিছু ছিলো না। আর রাত্রি যাই বলতো সেটা আমার ভালোর জন্যই বলতো। যেমন ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার জন্য।
.
আমি রোজা রাখতে পাড়তাম না। শুধু মাত্রই রাত্রির অনুরোধে রাখি। কষ্ট হলেও রাখতে হবে কারণ আমি আমার বউটা কে অনেক বেশি ভালবাসি। আসলে ভালবাসাই পারে সব কিছুকে হার মানাতে। আর আমি আমার বউয়ের ভালবাসাতেই নিজেকে নতুন করে সাজিয়ে নিচ্ছি।
.
১৫ মিনিট পরঃ
- কি হলো এখনো উঠো নি?
- হুমম উঠতেছি তো।
- তাড়া-তাড়ি উঠো না লক্ষি টা।
- আজ রোজা না রাখলে হয় না??
- না হয় না। রোজা রাখতেই হবে।
- আমি তো পারি না।
- কেনো পারবেনা? আর শোনো না পারলেও পারতে হবে। আর আমি এত কিছু জানি না। ৩০ টা রোজা তোমাকে করতেই হবে।
- আচ্ছা বাবা রাখবো।
- এই তো লক্ষী ছেলে। তাহলে তাড়া-তাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে নাও।
- আচ্ছা।
.
উঠে মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। আর ঐ দিকে রাত্রি খাবার বাড়ছে। তার পাশে গিয়ে বসলাম। একসাথে খাচ্ছিলাম। আমার এক বদ অভ্যাস ছিলো যে তাড়া-তাড়ি খেতে পারতাম না।
.
- এ কি এখনো খাওয়া শেষ হয়নি?
- খাচ্ছি তো।
- প্লেট টা তার কাছে নিয়ে গেলো। বড় করে হা করো।
- তার কথা মতো হা করলাম।
.
তার নিজ হাতেই খায়িয়ে দিচ্ছে। খাচ্ছি আর আমার চোখের মধ্যে তো ঘুম গুড় পাক খাচ্ছিলো। তাড়া-তাড়ি খেয়ে বিছানায় এসে শুয়ে পড়লাম।
.
- কি ব্যাপার হুমম?? নামাজ কে পড়বে শুনি??
- আমার না অনেক ঘুম পাচ্ছে গো।
- আগে নামাজ পড়ে আসো পরে ঘুমাবে। উঠো তাড়া-তাড়ি।
.
কি আর করার বাধ্য ছেলের মতো উঠে গেলাম। ঔযু করে আসলাম।
.
- এই নাও তোমার টুপি।
- হুমম দাও।
- তুমি নামাজ পড়ে আসো। আমিও নামাজ পড়ে নেই।
- আচ্ছা।
.
বাসা থেকে বের হলাম মসজিদে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। যাওয়ার পথে বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে যায়।
.
- আরে দোস্ত তুই?
- হুমম আমিই। তো কি অবস্থা তোর?
- আলহামদুলিল্লাহ্ ভাল তোর কি অবস্থা?
- এই তো ভাল।
.
বলতে বলতে ও পকেট থেকে কি যেনো বের করলো। পরে বুঝতে আর বাকি রইলো না।
.
- দোস্ত নে।
- না রে দোস্ত রমজান মাসে এইসব থেকে বিরত রেখেছি।
- কি বলিস? তোর মুখে এই কথা??
- হুম দোস্ত তোর ভাবিকে কথা দিয়েছি যে রমজান মাসে সিগারেট খাবো না। আর রমজান মাসে এগুলা করাও হারাম। আর এই মাসটা নেক আমল করি। আল্লাহ্ কে খুশি করিয়ে যদি তার কোন বান্দা তার কাছ থেকে কিছু চায়। তাহলে তিনি তা অবশ্যই দেয়।
.
পকেট থেকে সিগারেটের প্যাঁকেটটা ছুড়ে ফেলে দিলো মাটিতে। এবং বললো -
.
- আজ থেকে আমিও বাদ দিলাম এইসব। রমজান মাসে আর এইসব করবো না। এই ৩০ টা দিন আল্লাহ্র ইবাদাত করবো এবং রোযা রাখবো। ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবো।((ইনশাআল্লাহ্))
- ইনশাআল্লাহ্
- চল ফজরের নামাজ পড়ে আসি।
- হুমম চল।
.
শুধু আমি আর আমার বন্ধু নয়। সবাই পারি অন্তত রোজার মাসে এইসব থেকে নিজেকে বিরত রাখতে। তার জন্য বিশেষ কিছুর প্রয়োজন নেই।শুধু দরকার নিজের প্রতি বিশ্বাস এবং আল্লাহ্ তা'আলার প্রতি ভালবাসা। নিজে ওয়াদা করলেই সব কিছু করা যায়।
ইনশাআল্লাহ্ চাইলে অবশ্যই পারবো।
.
.
.
লেখাঃ হৃদয় নাদিম।
Comments
Post a Comment