আগামীকালই কুয়াকাটা যাবে ডিসিশন নেয়। সবাই রাতে খাবার করে একসাথে বসে। পিয়াসের এখন একটাই ইচ্ছে সরাসরি বলবে স্নিগ্ধাকে তার মনের না বলা কথা। কিন্তু সাহস পাচ্ছে না। তাই সেইদিনের স্বপ্নটাকে ফ্লো করবে ভাবছে। স্বপ্নের মতো করে শুরু করবে ভাবে।
.
ঘুম নেই চোখে। বিছানায় এপাশ ওপাশ করছিলো পিয়াস। ঘুম আসছিলো না বলে ছাদে যাওয়ার জন্য পিয়াসের রুম থেকে বের হয়। বের হয়ে দেখে টিভি চলছে। কিন্তু কে টিভি দেখবে এতো রাতে? রাত তখন প্রায় আড়াইটা বাজে। সামনে আসতেই স্নিগ্ধাকে দেখতে পেলো টিভির আলোতে।
.
মনে দুষ্টামি বুদ্ধি এলো যে স্নিগ্ধাকে ভয় দেখাবে। কিন্তু কি করে ভয় দেখানো যায় তা ভাবছিলো পিয়াস। হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি আসলো যে সাদা কাপর পড়ে ভয় দেখাবে। রুমে গেলো সাদা কাপরের খোঁজে। কিন্তু সাদা কাপর কোথায় পাবে? তার রুমে তো সাদা কাপর নেই। পরে মনে হলো সাদা রংয়ের পাঞ্জাবির কথা।
.
পাঞ্জাবিটা মাথা অবধি ছিলো। যাতে করে পিয়াসের মুখটা দেখা যাচ্ছিলো না। রুম থেকে আস্তে আস্তে বের হয়ে টিভির রুমে যায়। কিন্তু টিভি অফ তার মানে স্নিগ্ধা চলে গেছে ঘুমোতে। রুম কুটকুটে অন্ধকার ছিলো। হঠাৎ পিছন থেকে কে যেনো পিয়াসকে ডাকে অদ্ভুত কন্ঠে। যেটা শুনে পিয়াস খুব ভয় পেয়ে যায়। এবং সাথে সাথে বাল্বটা জ্বালায় পরে পিছনে তাকিয়ে দেখতে পারে স্নিগ্ধা দাঁড়িয়ে আছে।
.
- কি স্যার কেমন দিলাম?
- তু তুমি?
- হ্যাঁ আমিই। তুমি কি ভাবছিলা ভুত?
- হুমম। কিন্তু আমার ধারণাটা ভুল ছিলো।
- মানে?
- ভাবছিলাম ভুত কিন্তু দেখতে পেলাম পেত্নী।
- কিহ... আমি পেত্নী?
- না না। কে বলছে তুমি পেত্নী?
- এই মাত্র তো তোমার মুখ থেকেই শুনতে পেলাম।
- আচ্ছা বাদ দাও। তুমি কিভাবে বুঝলা আমি এসেছিলাম।
- যখন আমার পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলে তখনই দেখতে পেয়েছিলাম।
- কিভাবে?
- টিভির মধ্যে তোমার ছায়া দেখে।
- আমার ছায়া দেখেই চিনে ফেলছো?
- হুমম।
- বাহ ভালই তো।
.
পিয়াস ভয় দেখাতে গিয়ে নিজেই ভয় পেয়ে গেলো। কি অদ্ভুত কান্ডরে বাবা। কিন্তু স্নিগ্ধা জানলো কিভাবে যে পিয়াস আবার আসবে। এটা বারবার পিয়াসের মনের মধ্যে প্রশ্ন হচ্ছিলো। তার মানে কি তারা দু'জন দু'জনার মনের কথাও জেনে যাচ্ছে? এরকম আরো কিছু অদ্ভুত প্রশ্ন বারেবারে জিজ্ঞাসা করছে পিয়াসের মনকে।
.
- এই কি ভাবছো?
- না কিছুনা। তুমি এতো রাতে টিভির রুমে? ঘুমাবে না?
- ঘুমই তো আসছে না। তাই তো টিভি দেখছিলাম। তুমি এখানে কেনো?
- আমি তো ছাদে যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলাম।
- এত রাতে ছাদে কেনো?
- তোমার কথা মনে পড়ছিলো।
.
কথাটি বলে থেমে গেলো। স্নিগ্ধা শুনেও না শুনবার বান করে। পুণরায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পিয়াসকে। পিয়াসও কিছু বলে না তাকে। দু'জন দু'জনকে দেখছে অপলক দৃষ্টিতে। স্নিগ্ধা হঠাৎ করে পিয়াসের হাতটি ধরে ফেলে। দু'জনই চোখের দিকে তাকিয়ে আছে দু'জনার। পিয়াস বুঝতেই পারেনি যে স্নিগ্ধা তার হাতটি ধরে রেখেছে। এরকম মুগ্ধকর ভাবে দেখছিলো দু'জন।
.
অবশেষে চোখের পলক পড়ে যায় স্নিগ্ধার। পরে বুঝতে পারে সে পিয়াসের হাতটি ধরে রেখেছে। লজ্জা পেয়ে হাতটি ছেড়ে চলে যেতে চায়। কিন্তু পিয়াস তার হাতটি ধরে টান দিয়ে বুকের মধ্যে জড়িয়ে নেয়। দু'জনই চুপ শুধু নিশ্বাসের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে।
.
- আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি স্নিগ্ধা। আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না স্নিগ্ধা।
স্নিগ্ধা চুপ করে আছে। কি বলবে কিছু বলার ভাষা পাচ্ছে না খুঁজে। হয়তো সে এটাই শুনতে চেয়েছিলো পিয়াসের মুখ থেকে। স্নিগ্ধার নিশ্বাস আরো জোরে বের হচ্ছিলো। হার্টবিট আপ ডাউন করছিলো তার।
- কি কিছু বলবে না তুমি?
- আমিও তোমাকে ভালোবাসি।
.
স্নিগ্ধার মুখ থেকে কথাটি শুনতে পেয়ে পিয়াস আনন্দে তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। স্নিগ্ধাও মিশে যায় আলতো করে পিয়াসের বুকে। রাত ৩ টা বেজে যায়। অনেক রাত হয়ে যায়। পরে দু'জন ঘুমাতে যায়। কিভাবে কি হয়ে গেলো তা পিয়াস এবং স্নিগ্ধা কিছুই বুঝতে পারলো না।
.
ঘুমিয়ে পড়ে তখন। সকালে স্নিগ্ধার ছোট বোন রুমির ডাকে ঘুম ভেংগে যায় পিয়াসের। সকাল সকাল বায়ণা ধরে ক্যাটবেরি চকলেট এর জন্য। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নেয়।
.
- রুমি
- হুমম ভাইয়া।
- তোমার ক্যাটবেরি অনেক পছন্দের?
- হ্যাঁ ভাইয়া।
- তোমার আপুর পছন্দ কি?
- আপুও ক্যাটবেরি অনেক পছন্দ করে।
- ওহহহ। আচ্ছা আমি দোকান থেকে নিয়ে আসতেছি।
- আচ্ছা ভাইয়া।
.
বাসা থেকে বের হয়। রাস্তা দিয়ে হাটছে আর রাতের ঘটনা গুলো মনে করছে। মাঝে মাঝে হাসছেও একা একা। পিয়াস বলে এরকম একটি রাত কখনো ভুলা সম্ভব নয়। ভুলতে চাইলেও ভুলা যাবে না।
.
চকলেট নিয়ে বাসায় আসে। রুমিকে চকলেট দেয়। এবং বাকি চকলেট গুলো স্নিগ্ধার জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু গিয়ে দেখে তখনো ঘুমোচ্ছে সে। ঘুমালে তাকে আরো বেশি সুন্দরী দেখায়।
.
- স্নিগ্ধা.. উঠো।
- হুমম..<ঘুম ঘুম কন্ঠে>
- উঠো।
চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে পিয়াসকে। সাথে সাথে উঠে বসে পরে বিছানায়।
- শুভ সকাল <একটা মিষ্টি হাসির সাথে কথাটি বলে>
- হুমম শুভ সকাল।
চকলেট গুলো হাত বাড়িয়ে স্নিগ্ধাকে দেয়। স্নিগ্ধা চকলেট গুলো পেয়ে খুব খুশি। চকলেটের সাথে প্রিয় মানুষটিকে দেখে আরো বেশি খুশি।
.
- এত্তগুলা থেংক্স
- শুধু থেংক্স?
- আর কি চাই?
- আই লভ ইউ
- আই লভ ইউ টু।
.
পরে পিয়াস তার রুম থেকে চলে আসে। পিয়াস তার ভালোবাসার মানুষটির নতুন করে প্রেমে পড়ে যায়।
.
.
.
Ridoy Nadim (((AR PagLaaa)))
Comments
Post a Comment