"ব্যাচেলর" (৩০ তম পর্ব)



রাতের পার্টিটা শেষ হয় ভালই মজা মাস্তির মধ্যে দিয়ে। খুশিতে আমি একটু বেশিই খেয়ে ফেলি। আর ঐ দিন আমাকে নিয়েই বাকিরা মজা নেয়। পিনিকে উল্টা পাল্টা কি না কি করে ফেলছিলাম। আর ঐ গুলো রুবেল ভিডিও করে। পরের দিন সকালে আমাকে ভিডিওটা দেখায়। আন্ডার ওয়ার পরে লাফাইছি। কি লজ্জ্বা তাড়া-তাড়ি রুবেলজে রিকুয়েস্ট করে ভিডিওটা ডিলেট করালাম। এইগুলো মানুষ দেখলে মান ইজ্জত কিছুই থাকবে না। রাতের বেলায় পিনিকে নীলার সাথেও কিভাবে জানি কথা বলছি কে জানে। সেটা নীলার সামনে গেলেই শুনতে পারবো। সকালে রিমনদের বাসা থেকে আমাদের বাসায় আসি। এবং ফ্রেশ হয়ে একসাথে নাস্তা করলাম।
.
- কিগো কথা বলবে না?
- না কোনো কথা নেই আপনার সাথে।
- কেনো? কি করেছি আমি?
- কিছু করেন নি।
- আহা বলো না কি হয়েছে।
- বললাম না কিছু না।
- নাস্তা করেছো?
- নাহ।
- যাও নাস্তা নিয়ে আসো। একসাথে করবো।
- পারবো না।
- আচ্ছা এই যে কানে ধরলাম। ভুল কিছু করে থাকলে দয়া করে ক্ষমা করে দিও। তারপরও রাগ করে থেকো না।
- আমি রাগ করলে আপনার কি? গতকাল রাতে আমার সাথে এভাবে কেনো কথা বলছেন?
- কি বলছি গো? সত্যি আমার কিছুই মনে নাই। খুশিতে কাল বেশি ড্রিংক করে ফেলছিলাম।
- হুহ।
.
পরে নীলার রাগ ভাঙিয়ে তার সাথে বসে নাস্তা করলাম। মেয়েটা খুব ভালবাসে আমাকে। আমার সব ভুল গুলো মেনে নিচ্ছে। আমিও ভালবাসি আমার কলিজাটাকে। যদি ভাল নাই বাসতাম তাহলে কি আর পাগলামি করতাম তার জন্য। সবার সাথে আর নাস্তা করতে পারলাম না। বউয়ের রাগ ভাঙাতে ভাঙাতে সবার নাস্তা করা শেষ হয়ে যায়। পরে আমি আর নীলা দুইজনই একসাথে আমার রুমে নাস্তা করলাম।
.
- নীলা আজ খালাদের বাসায় যেতে হবে দুপুরে। তুমি রেডি হয়ে নিও।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
- শাড়িটা পইরো।
- আপনি শুধু শাড়ি পড়তে বলেন কেনো? এমনিতেই শাড়ি সামলাতে পারিনা।
- আমাকে সামলাতে পারছো তাহলে শাড়িও সামলাতে পারবে।
- ইশশ আসছে আমার।
- কি?
- বলো না।
- না কিছুই না।
- বলবা না?
- আরে কি বলবো। জামাই বলতাম।
- ইশশ জামাই? কতদিন অপেক্ষা করেছিলাম তোমার মুখে জামাই ডাক টা শুনার জন্য।
- আচ্ছা ঠিক আছে। এখন চলেন সবাই বসে আছে।
.
পরে সবার সামনে গেলাম। খালা সকালেই সুমাকে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। রবিন যায়নি তাদের সাথে। অবশেষে সুমাকে মেনে নিয়েছেন তারা। এটাই ভালো বাড়ির বউকে তো মেনে নিতেই হবে। আমার বউটাকে যে কবে নিজের করে পাবো। রিমন তো আমাদের সাথেই ছিলো। রিমন ওদের বাসা থেকে আমাদের বাসাতেই বেশি থাকতো। আমি যখন মিরপুরে চলে যাই। তখন থেকে আমাদের বাসায় বেশি থাকতো। আব্বা-আম্মা আমাকে যতটা ভালবাসতো রিমনকেও ততটাই ভালবাসতো।
.
- নীলা মা।
- জ্বি আম্মু।
- একটু এই রুমে আসো তো।
- জ্বি আম্মু আসছি।
.
আমিও নীলার সাথে গেলাম মা'য়ের রুমে। নীলা মা'কে আম্মু বলেই ডাকতো। পরে মা গয়না বের করে দিলো। এবং বলেন যে এইগুলো আমার বউয়ের জন্যই রেখে দিয়েছিলো। নীলাকে বলে এইগুলো পড়ার জন্য। নীলাকে আমি নিজেই পড়িয়ে দিলাম। মা বসে ছিলেন আমাদের সামনেই। নীলাকে পড়িয়ে দিচ্ছিলাম আর মা কে বলছিলাম।
.
- মা। সব কি আমার বউয়ের জন্যই রেখেছো? আমার জন্য কিছু রাখোনি?
- কেনো? তুই কি এইগুলো পড়বি নাকি?
- এইগুলো আমি পড়বো কেনো? আমি যেগুলো পড়ি ঐ গুলো কিনে দিবে।
- দিবো নে পরে।
.
এর মধ্যে নীলাকে গয়না গুলো পড়িয়ে দিলাম। এবং মা'কে দেখালাম। মা খুশি হয়েছিলেন নীলাকে দেখে। এবং মন্তব্য করলো খুব ভাল লাগছে নীলাকে দেখতে। আমি আমার বউটাকে নিয়ে সবার সামনে গেলাম। নীলার মাথায় ঘোমটা দিয়ে নিয়ে আসি। নতুন বউ বলে কথা। সবাই দেখেও খুশি হয়।
.
- বিয়ে না হতেই বউয়ের পিছু ছাড়ছিস না। বিয়ে হলে মনে হয় তোকে আর খুঁজেই পাওয়া যাবেনা।
- হ। একটা মাত্র বউ আমার। পিছু নিবো না কেনো?
- হ্যা সবসময়ই এভাবে আগলে রাখিস।
- এখন বল আমার বউটাকে কেমন লাগছে?
- বউটাকে খুবই সুন্দর লাগছে কিন্তু বউয়ের পিছনের মানুষটাকে মোটেও ভাল লাগছে না। পুরো বানরের মতো লাগছে।
- কি বললি কুত্তা?
.
পরে টয়ার চুল ধরে টানি। টয়ার সাথে আমার মারা-মারিটা সবসময়ই লেগে থাকতো। আমাদের মাঝে ঝগড়া ছাড়া কিছুই ছিলো না। আর এভাবে টয়া সবসময়ই আমাকে রাগাতো। আমিও টয়াকে চুল টানতাম।
.
- ব্যথা পাইতাছি কিন্তু কুত্তা। চুল ছাড়।
- ছাড়তাম না। আগে বল আমাকেও সুন্দর লাগছে।
- আচ্ছা। তোকেও সুন্দর লাগছে। এখন চুল ছাড়।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
- তোকে পুরা লাল বান্দরের মতোই লাগছে।
.
বলেই অন্য রুমে দৌঁড়ে চলে যায়। আমিও টয়াকে তাড়া করলাম। টয়া মায়ের পিছনে গিয়ে দাঁড়ায়। মা'য়ের সামনে আরো বেশি বেশি বলছে। মা আমাদের দুষ্টামি দেখে হাসছিলেন।
.
- তোরা আর চেঞ্জ হইলি না।
- মা তুমি কিছু বলো না। তোমার সামনে তোমার ছেলেকে কি সব বলতেছে।
- খালাম্মা কি বলবে? খালাম্মাও জানে যে তুই বান্দর।
- আচ্ছা এখন চুপ কর তোরা।
- তোমার ছেলে আমাকে চুল ধরে টেনেছে। খালাম্মা কিছু বলো না তুমি।
.
এই দেখ এখন সব দোষ আমাকেই দিচ্ছে। মা আমাকেও বকা দিতেছে। দোষ করলো টয়া। আর বকা শুনছি আমি। কিছুই করার নাই। সবসময়ই এটাই চলে আসছে। সবাই রেডি হইলাম খালার বাসায় যাওয়ার জন্য। নীলা শাড়ি পড়েছিলো। আর মা শাড়ি পড়িয়ে দিয়েছিলো নীলাকে। তো পরে খালার বাসায় চলে আসলাম সবাই। আপু আর সুমা খালার সাথে সকালেই চলে আসে।
.
নীলাকে নতুন বউয়ের মতোই লাগছিলো। নীলাকে নিয়ে রিক্সা করে আমিও আগে আগে চলে আসি খালার বাসায়। পরে বাকিরা আসে। অনেকদিন পর খালার বাসায় গেলাম। আব্বা-আম্মা দই-মিষ্টি নিয়ে গেলেন। এইগুলো কেনো নিয়ে গেলো এর কারণে খালার থেকে কতো কথা শুনলেন। নীলা প্রথমে খালা - খালুকে সালাম করলেন। আমি কখনো কাউকে সালাম করিনি। তাই খালা বললেন।
.
- তুই দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?
- আমারও সালাম করতে হবে?
- করবি না কেনো?
- আমি পারবো না।
- তাহলে টাকাও পাবিনা। শুধু বউমা টকা পাবে।
- আচ্ছা দাঁড়াও সালাম করতেছি।
- এখন করলে টাকা পাবিনা।
- এটা কেমন কথা?
- আরে বোকা সালাম করতে হবে না। তোদের জন্য সবসময়ই দোয়া আছে আমাদের।
.
কথাটি বলে নীলা এবং আমাকে খালার বুকে নিলেন। আপু তখনও দেখেনি আমাদের। পরে গিয়ে আপুকে ডাকলাম। আপু নীলাকে তো প্রশংসা শুরু করে দিলো। নীলাও পরে আপুকে সালাম করে। নতুন বউটা সালাম করতে করতে শেষ হয়ে যাচ্ছে। বিয়ে করলে সবাইকে সালাম করতে হয় কেনো বুঝিনা। একই কথা আপুও বলে যে তাকেও সালাম করছিনা কেনো। পরে আর কি করার জীবনের প্রথম আপুকেই পা ধরে সালাম করলাম।
.
আমি গিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে নিজে নিজেই নিয়েই খাচ্ছিলাম। আমি সবসময়ই এরকম ছিলাম। আমাকে কখনো খাবার বেড়ে দেয়নি। আমার যখন ইচ্ছে হয়েছে  নিজেই নিয়ে খেয়েছি। আর খালার বাসায় তো আগে এক সপ্তাহ আমাদের বাসায় থাকতাম পরের এক সপ্তাহ খালার বাসায় থাকতাম। তাই ফ্রি ছিলাম সবার সাথে। আমার ছোট খালা আসেন ঐ দিন। ছোট খালা আমাদের বাসায় গতকাল আসতে পারেনি। কি যেনো একটা ঝামেলা ছিলো তাদের। ছোট খালা আমাদের দেখে খুব খুশি হলেন।
.
- আব্বাজান ভালো আছো তুমি?
- জ্বি খালা। তুমি কেমন আছো? আর গতকাল আসলে কেনো? তোমার সাথে আমি রাগ করেছি কিন্তু।
- আব্বাজান গতকাল সকালে তোমার খালু একটু অসুস্থ হয়ে পরে। তাই আসতে পারিনি।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
- আমার আম্মাজান কোথায়? আম্মাজানকে দেখছিনা যে।
.
পরে নীলার সাথে পরিচয় হয়। নীলাকে দেখে তো আম্মাজান ডাকতে ডাকতে শেষ। ছোট খালা আমাকে সবসময় আব্বাজান বলে ডাকতো। আমাকে আর রবিনকে খুব ভালোবাসতেন ছোট খালা। সবাই একসাথে খুব মজা করলাম। এবং পরে খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম। ছোট খালা আগে আমাকে খাইয়ে দিলেন। কারণ তার সামনে কখনো আমাকে নিজ হাতে খেতে দিতো না। সবসময়ই আমাকে খাইয়ে দিতেন পরে তিনি খেতেন। সেই সুযোগে আমার দেখা দেখি নীলাকেও খাইয়ে দিলেন। খুব ভাল মনের মানুষ ছিলেন তিনি। আমাদের খাইয়ে দেওয়ার পর রবিন আর সুমাকেও খাইয়ে দিলেন। আর সে সুযোগে আপুও খেয়ে নিলো। আমার সব চাইতে পছন্দের মানুষ ছিলেন আমার এই ছোট খালা।
.
- খালা আজ কিন্তু তুমি আমাদের সাথে থাকবে। আর রাতেও তোমার হাতে খাবো।
- আচ্ছা আব্বাজান।
- হুমম ঠিক আছে। আম্মাজান তুমি আমার পাগলটাকে সামলাতে পারবে তো?
- দোয়া করবেন খালা।
- হ্যা অবশ্যই তোমাদের জন্য অবশ্যই দোয়া আছে।
.
ঐ দিন রবিনদের বাসাতেই থাকতে হয়। কারণ খালা কোনো ভাবেই আমাদের যেতে দিচ্ছিলেন না। তাই আমরা সবাই রবিনদের বাসায় থাকি। পিঠা বানালেন খালা। আমরাও পিঠা খেলাম। বাপা পিঠা আমার খুব পছন্দের ছিলো।
.
- দোস্ত তোদের সময় দিতে পারছিনা রে। রাগ করিস না কিন্তু।
- আরে দোস্ত না। তোর ফ্যামিলি মেম্বার্স খুব ভালো রে। আর আমাদের তো অনেক আদর করলেন।
- আমি আমার ফ্যামিলিকে খুব ভালবাসি। আর তোরা হইলি আমার ফ্রেন্ড। তোদেরকে তো আমার থেকেও বেশি আদর করবেন।
- তবে দোস্ত একটা সমস্যা আছে।
- কি হয়েছে?
- সবই পেলাম। কিন্তু বিড়ির প্যারা তো আর নিতে পারছিনা।
- আচ্ছা দাড়া আমি রবিনকে বলে ম্যানেজ করে দিচ্ছি।
.
পরে রবিনকে বললাম। রবিন তো বিড়ির কথা শুনে খুশিই হয়ে গেলো। আমি তো শুধু আমার বউটার জন্য খেতে পারিনা এখন। সেটা নিয়ে আমার কোনো আফসোস ও নেই। আমার তেমন প্যারাও নাই এখন। এভাবে দুষ্টামি ফাইজলামি করে রাত কাটিয়ে দিলাম। ঐ দিন রাতে আবারো চুরি করার শখ জাগলো। তাই আমি, রিয়াদ, রুবেল, রবিন, রিমন রাতে বের হলাম ডাব চুরি করতে। রুবেলই উঠে গাছে। ডাব পেরে নিচে নামলো। পরে ঐ ডাব নিয়ে গিয়ে সবাইকে খাওয়ালাম। গাছটা রবিনদেরই ছিলো। কিন্তু এটাকে চুরি বলে না কি বলে সেটা জানিনা।
.
খালা বকা দিয়েছিলেন রাতে কেনো গাছে উঠে পারলো। যদি গাছ থেকে পড়ে যেতো। এর কারণেই বকা দিয়েছিলেন। যাইহোক খুব ভাল ভাবেই কেটে যায়। কিন্তু ঐ দিন রাতে সব বানর গুলো একসাথে ছিলাম। আর ঐ দিন সবাই মিলেই স্মোকিং করলাম। নীলা জানলে আমার খবর আছে। কিন্তু ফ্রেন্ডদেরকেও তো খুশি রাখতে হবে। অনেকদিন পরই মজা করলাম।
.
সকালে উঠে যাই ঘুম থেকে। আমার সকাল বেলাই ঘুম ভেঙে গেলো কেনো জানি। তাই কাউকে না ডেকে একা একাই একটু বাহিরে হাটতে গেলাম। সকাল বেলার আবহাওয়াটা আসলেই অনেক সুন্দর। আগে শুধু শুনেছিই কিন্তু আজ নিজেই বুঝতে পারলাম। তখন ভোর ৫ টা কি সাড়ে ৫ টা হবে। হালকা শীত পড়ে যায় সেই সময়টায়। আর ভোরে একটু ঠান্ডা ঠান্ডাই লাগে। আমি মোবাইলটা ভুলে বাসায়ই রেখে এসেছিলাম। হাতে ঘড়ি ছিলো আর তখনই সময়টা দেখেছিলাম। খালাদের বাসা থেকে কিছুটা সামনেই একটা জায়গা ছিলো। ঐ জায়গাটায় অনেক গুলো গাছ একত্রে ছিলো। জায়গাটা আমার খুব পছন্দের ছিলো। প্রায়ই সময়ই আমি সেখানে গিয়ে সময় কাটাতাম। আর আজ অনেকদিন পর সেখানে গেলাম।
.
সকালের আবহাওয়াটা ছিলো হালকা মৃদু বাতাসে গাছের পাতা গুলো নড়ছিলো। আর বাতাস গুলো আমার কানে এসে শব্দ হচ্ছিলো। গায়ের পশম দাঁড়িয়ে গেলো ঠান্ডায়। প্রায়ই ৩০ মিনিটের মতো সেইখানে বসে ছিলাম। তারপর উঠে বাসায় আসি। বাসায় গিয়ে দেখি এখনো সবাই ঘুমোচ্ছে। আমি মোবাইলটা চার্জে দেওয়া থেকে খুলে হাতে নেই। এবং দেখলাম কয়েকটা কল এসেছিলো। কলটি নীলারই ছিলো। ৪ টা ৫৫ মিনিটে প্রথম কল দিয়েছে এবং শেষ কল ৫ টা ২০ মিনিটে। এর মাঝে মোট ২৫ বার কল দিয়েছে। কি ব্যাপার এত সকালে নীলা এতগুলো কল দিলো। তাই কল ব্যাক করলাম। রিং হওয়ার সাথে সাথেই নীলা রিসিভ করে।
.
- কি গো? কি হয়েছে?
- কোথায় ছিলেন আপনি?
- আমি তো মোবাইলটা রুমে রেখে একটু বাহিরে গিয়েছিলাম হাটতে।
- ওহহহ। আমার ঘুম আসছিলো না। তাই আপনাকে কল দিয়েছি।
- আচ্ছা আসো আমি নিচে আছি।
- আসতেছি অপেক্ষা করেন।
- শোনো বাহিরে কিন্তু একটু ঠান্ডা। আসার সময় আমার ব্লেজারটা নিয়ে এসো।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
.
একটু পর নীলা আসে। নীলার চোখ গুলো ছোট হয়ে গেছে। ঘুমায়নি সারা রাত বুঝাই যাচ্ছে। নীলাকে সাথে করে নিয়ে বাসার বাহিরে গেলাম। ঐ জায়গাটাই আবার গেলাম। বেশি না বাসা থেকে ১০ মিনিট হাটলেই যাওয়া যায় ঐ জায়গাটায়। নীলাকে দেখলাম ঠান্ডায় কাঁপছে।
.
- ব্লেজারটা পড়ো। শীতে তো কথাই বলতে পারছো না।
- আপনি পরবেন না?
- এটা আমি তোমার জন্য নিয়ে আসতে বলেছি।
- ওহহহ আচ্ছা।
.
ব্লেজারটা পড়ে তার এক হাত দিয়ে আমার বাম হাতটি জড়িয়ে ধরে হাটছিলো। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম ঐ জায়গাটায়। নীলার ভয় করছিলো পরে আমাকে বলে এই কথাটি। আমি শক্ত করে তার হাতটি ধরি। এবং চিৎকার করে বলি "নীলা আমি তোমাকে ভালবাসি" কথাটি কয়েকবার রিপিট হচ্ছিলো। আমাদের কানেই বেশ কয়েকবার আসছিলো।
.
- এই পাগল হয়ে গেছেন?
- হ্যা পাগল হয়ে গেছি।
- আর পাগলামি করতে হবে না। এখন বাসায় চলেন।
- কেনো ভয় করছে?
- উঁহুম। মোটেও এখন ভয় করছে না।
- কেনো?
- আপনি আমার পাশে আছেন। তাই ভয় পাচ্ছিনা।
- ইশশ তাই?
- জ্বি তাই। এখন বাসায় চলেন। আমার হাত যেভাবে ধরে রেখেছেন ঠিক ঐ ভাবেই ধরে রাখবেন। একটুও ছাড়বেন না কিন্তু।
- আচ্ছা গো আমার বউটা। কোলে নিতে হবে?
- যে শরীর উনার আবার আমাকে কোলে নিবে।
- কি? এত বড় কথা।
.
পরে তাকে কোলে করেই নিয়ে এলাম বাসা পর্যন্ত। নীলা শুধু একটাই কথা বলছিলো 'কেউ দেখে ফেলবে তো'। দেখুক না বউটা তো আমারই। বাসার গেইটের সামনে এসে নীলাকে নামিয়ে দিলাম। পরে বাসার ভেতরে চলে গেলাম। বাসায় গিয়ে সোফায় বসে আছি দুইজন। ফিস ফিস করে কথা বলছিলাম। অনুভূতি গুলো বুঝানো যাবে না।
.
(চলবে)
.
.
লেখাঃ হৃদয় নাদিম

Comments