.
- জানো পিয়াস। তোমার চোখের দিকে তাকালে খুব ভয় করে।
- ভয় করে? কিন্তু কিসের ভয়?
- তোমাকে হারানোর ভয়। তোমার চোখে আমি আমার ছায়া দেখতে পাই। যদি ছায়াটা হারিয়ে যায় কখনো।
- হারাবে কখনো। আমাদের ভালবাসার বিশ্বাসটা আমাদের মাঝেই থাকা উচিৎ। তাহলে আর হারাবার ভয় থাকবে না।
- কিন্তু...
- কোনো কিন্তু নয়।
.
পিয়াসের কাঁধে মাথা রেখে কথা গুলো বলছিলো স্নিগ্ধা। পিয়াসের মনে বার বার জিজ্ঞাসা করছে হঠাৎ এইসব বলছে কেনো সে। অনেকটা ভয় পেয়ে যায় পিয়াস। স্নিগ্ধাকে হারাবার ভয়। কিন্তু সেই ভয়টা বুঝতে দিচ্ছে না স্নিগ্ধাকে। মনের মধ্যেই চেপে রেখেছে।
.
স্নিগ্ধার ছোট বোন রুমির ডাকে ভাবনা থেকে ফিরে আসে। রুমির ডাকে দু'জনই ভয় পেয়ে যায়। স্নিগ্ধা সাথে সাথে পিয়াসের কাঁধ থেকে মাথাটা সড়িয়ে নেয়। দু'জনই স্বাভাবিক ভাবে হয়ে গেলো।
.
- কখন আসলে রুমি?
- এইতো ভাইয়া মাত্র আসলাম।
- আম্মু, ফুপ্পিরা কি করে?
- তারা ঘুমাচ্ছে।
- তুমি ঘুমাওনি?
- হ্যাঁ। উঠে গেছি।
- ওহহহ। খুদা লাগছে তোমার?
- হুমম ভাইয়া। তুমি কিভাবে বুঝলে ভাইয়া?
- আমি তোমার ভাইয়া যে তাই বুঝেছি।
.
পিয়াসের কথা শুনে স্নিগ্ধা হেসে দেয়। পিয়াস মনে মনে বলছে এই কেমন মেয়েরে বাবা! এতক্ষণ চোখের পানি জড়িয়ে এখন আবার হাসছে। স্নিগ্ধাকে হাসিতেই অনেক ভাল লাগে। কেনো যে শুধু কাঁদতে যায়। রুমির ডাকে আবার ভাবনা জগত থেকে ফিরে আসে।
.
- পিয়াস ভাইয়া। কি ভাবছো?
- না। কিছুনা। কি খাবে?
- চিপস্।
- আচ্ছা আমি এনে দিচ্ছি।
.
স্নিগ্ধাকে জিজ্ঞাসা করে।
- তুমি কি খাবে?
- কিছুনা।
- চিপস্ আনবো?
- উঁহুম। <মাথা নেড়ে বলে>
- বললেই হলো। আমি নিয়ে আসছি। ঠিক আছে।
.
কথাটি বলেই পিয়াস নিয়ে আসতে যায়। হাটছে আর ভাবছে রুমি'কি সব দেখে ফেললো! কি হবে এখন যদি ফুপ্পিকে বলে দেয়। ভয় পেতে পেতে গেলো চিপস্ আনার জন্য। যেভাবে হউক রুমিকে ভুলাতে হবে যা দেখছে তা।
.
অন্যদিকে রুমি তার বোনকে জিজ্ঞাসা করে। রুমির ক্লাস থ্রী তে পড়ে। তবুও সবকিছুই বুঝতো। ডিজিটাল মেয়ে বলে কথা। ক্লাস ওয়ানের বাচ্চারাও বুঝে এখন। রুমি তো ক্লাস থ্রী'তেই পড়ে।
.
- আচ্ছা আপু একটা কথা জিজ্ঞাসা করি?
- হুমম করো রুমি।
- তুমি কি পিয়াস ভাইয়াকে পছন্দ করো?
.
রুমির মুখে এই কথাটি শুনে স্নিগ্ধা একটু বিরক্ত হয়ে যায়, এর কারণেই যে ছোট বোনের মুখে এইসব শুনতে পেয়ে। তবুও কিছু না বলে পরিষ্কার ভাবেই বলে দেয়। যাতে কাউকে না বলে দেয়।
.
- রুমি তুমি ছোট মানুষ। তুমি এইগুলো জেনে কি করবে?
- বলো না আপু।
- আগে বলো কাউকে বলবে না?
- আমার কাউকে বলতে হবেনা। সবাই জানে এই কথা।
- সবাই মানে? কে কে জানে? <ভয় পেয়ে যায়>
- আম্মু, মামী তারা তো জানেই।
- তুমি কিভাবে জানো তারা যে জানে?
- আম্মু এবং মামী তো প্রায়ই সময় তোমাদের নিয়ে কথা বলে।
- কি বলে আমাদের নিয়ে?
- বলে যে তোমরা বড় হলে তোমাদের বিয়ে দেবে। আচ্ছা আপু বিয়ের পর পিয়াস ভাইয়াকে কি বলবো?
- ভাইয়া বলবা। <মুচকি হেসে কথাটি বলে >
- আচ্ছা।
.
কিছুক্ষণের মধ্যেই পিয়াস চিপস্ নিয়ে চলে আসে। রুমির হাতে চিপস্ এর প্যাকেট দিলো। রুমি চিপস্ নিয়ে চলে আসে কেবিনে। শুধু বসে আছে স্নিগ্ধা এবং পিয়াস। স্নিগ্ধা হাসছিলো রুমির কথা গুলো মনে করে।
.
- কি হাসছো কেনো?
- এমনি।
- বলো না কেনো হাসছো?
- আহা বললাম তো এমনি।
.
একে অপরকে চিপস্ খাইয়ে দিচ্ছে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে পিয়াস স্নিগ্ধার হাতে আলতো করে কামড় বসিয়ে দিচ্ছে। এভাবেই চলতে থাকুক পিয়াস এবং স্নিগ্ধার ভালোবাসা।
.
.
(চলবে)
Comments
Post a Comment